
হাজার সংবাদ ডেস্ক: প্রতারণা চলছে গোটা দেশের বিভিন্ন জায়গায়। প্রত্যেকদিন নতুন নতুন প্রতারণার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সাইবার ক্রাইম এর মাধ্যমে কিভাবে এই প্রতারণা চলছে এবং এখনো পর্যন্ত কেন সাইবার ক্রাইম এতোটা সক্রিয় তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। সেনা ও দেশ মিলিয়ে এতগুলো অ্যাপ বরখাস্ত করার পরেও বহু মানুষ এখনো পর্যন্ত প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছে। ক্ষয় হছে অত্যাধিক পরিমান টাকা। কলকাতার বুকে এরকম ঘটনা অনেক ঘটেছে এবারও বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো বেশ কয়েকজনের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে লিঙ্কে ক্লিক করাই।
এবার এক ব্যবসায়ী অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১ লাখ টাকার বেশি গায়েব হয়েছে। এরমধ্যে এক বিউটিশিয়ানের একাউন্ট থেকেও উধাও হল 30 হাজার টাকা। তার ফোনে আসা ফোন ধরতেই জানায় যে তিনি ভারতীয় এক সেনা, নাম বাবলু পরিচয় দিয়ে তিনি জানান তার মেয়ের বিয়েতে বিউটিশিয়ান দিয়ে সাজাতে চান। সাথে সাথে সেই বিউটিশিয়ান তার আগের কাজের বেশকিছু ডেমো পাঠায় ওই সেনাকে। তা দেখে ভারতীয় সেনা বাবলুর পছন্দ হয় এবং জানান যে তিনি অগ্রিম টাকা এডভান্স দিয়ে ওই আর্টিস্টকে বুক করে রাখতে চান। তার জন্য আগাম টাকা পাঠাতে চান। তখন ওই সেনা জানায় যে তার upi id থেকে ১ টাকা পাঠাতে এবং পাথাতেই ফোন একটা বারকোড পাঠায় সেই বারকোড স্ক্যান করতে বলে।
আরও পড়ুনঃ ভারতের পর এবার Google থেকে ২৫টি অ্যাপ বাতিলের নির্দেশ!
প্রথমবার বারকোড স্ক্যান করে 10 হাজার টাকা বিউটিশিয়ান এর অ্যাকাউন্ট থেকে ডেবিট হয়ে যায়। এই ঘটনাই ওই সেনা জানায় যে কোন টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য এটা হয়েছে। আমি অন্য আরেকটি বারকোড পাঠাচ্ছি আপনি অন্য আরেকটি একাউন্ট থেকে সেই বারকোড স্ক্যান করুন আশাকরি এবার ঠিকঠাক কাজ হবে। যখন সেই বারকোড স্ক্যান করে সাথে সাথে কুড়ি হাজার টাকা ডেবিট হয়ে যায় ওই বিউটিশিয়ানের অ্যাকাউন্ট থেকে। তখন তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারণার জালে জড়িয়েছেন। এটা পুরো একটা সাইবারক্রাইম হয়েছে। তিনি সাথে সাথে পুলিশের জানাই এবং অপরদিকে ফোন করা মাত্রই সেই নাম্বার থেকে কোনো অস্তিত্ব আর পাওয়া যায়নি।
এইরকম ভাবে এক ই-কমার্স ব্যবসায়ীরাও সাইবার ক্রাইম আন্ডারে জড়িয়ে পড়ছে। সাইবার ক্রাইম এর জন্য বহু ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তাদেরও। গ্যালন উপত্যকায় সেনাদের জন্য ৪০০০ সেফটি গগলস অর্ডার করেন সেনার পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি। সেনা আধিকারিক এর নাম করে যখন সেই সাইটে ৪০০০ সেফটি গগলস অর্ডার আসাই ওই কোম্পানির মালিক তড়িঘড়ি করে সেই অর্ডার নিয়েছিল। এবং তিনি খুব খুশি হয় অনেক কম দামে সেই সেফটি গগলস দিতে চেয়েছিলেন। মাত্র ৫৫ টাকার বিনিময়ে।
আরও পড়ুনঃ আইপিএল থেকে চিনা স্পনসর বয়কটের দাবী নেস ওয়াদিয়ারের!
অর্ডার কনফার্ম হওয়ার পর ভুয়া পরিচয় হীন সেনা আধিকারিক জানায় ওই ব্যবসায়ীকে যে ব্রান্দা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে আসতে। জায়গা ঠিক হওয়ার পর সেই ব্যবসায়ী সেখানে যান এবং তাকে ফোন করে বলা হয় যে অনলাইন মাধ্যমে টাকা পাঠানো হবে। তার ফোনে আসা কিউআর কোড স্ক্যান করলে তারপর টাকা চলে আসবে ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে। রীতিমত একবার বার কিউআর কোড পাঠান ওই ব্যক্তিকে এবং তিনি সেটি স্ক্যান করার সাথে সাথে প্রথমে ৬০০০০ টাকা উধাও হয়ে যায়। তিনি ওই সেনা কে জানানোর পর সে জানায় যে ভারতীয় সেনাদের সাথে লেনদেন করতে গেলে এই টাকা পেমেন্ট করতে হয়। টা সুনে ব্যবসায়ী রাজি হার কিছু বললেন না। দ্বিতীয় বার নতুন কিউআর কোড স্ক্যান করতে আরও ৪০ হাজার টাকা কেটে নেই। যখন দুষ্কৃতীর কাছে ফোন করে জানায় তখন সে বলে কোন টাকা পাইনি, সাথে সাথে ওই ব্যবসায়ী IT-A act অনুযায়ী মামলা দায়ের করেন সেই প্রতারকের নামে।
চোখের সামনে না আসা বহু মানুষ এভাবে হেনস্থা হচ্ছে সাইবারক্রাইমের ছলনায়। তাই প্রত্যেকটা মানুষকে খুব সাবধানে চলতে হবে। ফোনে আসা কোন লিঙ্ক কিংবা অন্য কোন অচেনা ব্যক্তির সাথে কথা বলে ব্যাংকিং সূত্রে কোন কাজে এগোবেন না। চেষ্টা করুন অনলাইন পরিষেবা মেটাতে কিন্তু তা যেন আপনার নিয়ম নিয়মাবলির মধ্যে হয়। তার নির্দেশ দেওয়ার নিয়ম অনুযায়ী আপনি একেবারেই চলবে না। অপরিচিত মানুষের ফাঁদে পড়ে বহু মানুষ বহুভাবে সাইবারক্রাইমের ফাঁদে পা দিচ্ছে এবং ক্ষতি করছে তাদের নিজেদের।